সিলেট সুরমা ডেস্ক : মিয়ানমার সেদেশ থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়া ও পুনর্বাসনে তিন পর্যায়ের পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে।বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনার জন্য ঢাকা আসা নেপিডো প্রতিনিধিদলের সদস্যরা শুক্রবার এখানে তাদের এই পরিকল্পনার কথা জানান।মিয়ানমারের সফররত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. জে. কিউ সির সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘মিয়ানমার জানিয়েছে তাদের রোহিঙ্গাদের) জীবিকা এবং পরবর্তীতে নাগরিকত্ব দেয়ার নিশ্চয়তাসহ ফিরিয়ে নেয়ার তিন পর্যায়ের প্রক্রিয়া করছে তারা।’বাংলাদেশে সফররত মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লে. জে. কিউ সি’র নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আজ বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এক বৈঠক মিলিত হয়। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশ ভূমি রাখাইনে মর্যাদার সঙ্গে ও নিরাপদে ফিরিয়ে নেয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে দু’দেশের মধ্যে গঠিত ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের অংশ হিসেবে আজ এ বৈঠক বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হয়।বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১১ লাখ নাগরিকের মধ্যে ১৬শ’ পরিবারের ৮ হাজার ৩২ জন নাগরিককে ফিরিয়ে নিতে একটি তালিকা সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে যে ১০-দফা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল তা নিয়ে আজ সফল আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমার নাগরিকদের সেদেশে মর্যাদার সাথে ফিরিয়ে নিতে তারা আন্তরিক হয়েছেন। পর্যায়ক্রমে তাদেরকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে স্থায়ী আবাসন ব্যবস্থা এবং সামাজিক মর্যাদার পাশাপাশি নাগরিকত্ব দেয়া হবে বলে বৈঠকে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, তিন পর্যায়ে মিয়ানমার নাগরিকদের বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে নেয়া হবে। ইতোমধ্যে ১০ লাখ ৬০ হাজার নাগরিকের তালিকা বাংলাদেশ প্রস্তুত করেছে। আরো ৬ হাজার মিয়ানমারের নাগরিক সে দেশের সীমান্ত এলাকায় জিরো পয়েন্টে অবস্থান করছে। তাদেরকেও ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে বৈঠকে তারা রাজি হয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ পক্ষ বারংবার মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বৈরী ও নৃশংস পরিস্থিতির বিষয়ে তাদের উদ্বেগ জানিয়েছে।তিনি বলেন, ‘আমরা জানিয়েছি, নিরাপত্তা ও খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা না হলে রোহিঙ্গারা আবারো ফিরে আসতে পারে।’বাংলাদেশে ইয়াবা ব্যবসা বন্ধ করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের কথা জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে মিয়ানমারে ইয়াবা উৎপাদনকারী ৪৯টি কারখানা চিহ্নিত করে অবিলম্বে তা বন্ধ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। তিনি সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি মিয়ানমার সরকারও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে বলে বৈঠকে মিয়ানমারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ (বাসস)